সময় সমাচার ডেস্ক :

কোরবানির পশু জবাই করার পর তা তিন ভাগের একভাগ গোশত জমা রাখা হয়। আর এ গোশত জমা রাখাকেই বলা হয় ‘পঞ্চায়েত’। কালক্রমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পঞ্চায়েত প্রথা হারিয়ে গেলেও ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের বৈলাজান গ্রামে আড়াইশ বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন এলাকাবাসী। বংশপরম্পরায় এই সামাজিক ঐতিহ্য ধরে রেখে ঐক্য ও সম্প্রীতির বার্তা দিচ্ছেন তারা। এবার ঈদ উল আজহা উপলক্ষে দেশের অন্যতম এ কোরবানির মাঠে ১৫৩টি খাসি ও ৭৬টি গরু কোরবানী করা হয়েছে। কোরবানির মাংসের সামাজিক বন্টন করা হয়েছে ১৬শত ২০টি। কেউ কেউ ঐতিহ্যবাহী কোরবানির মাঠকে দেশের বৃহত্তম কোরবানির মাঠ বলে বলেও দাবী করেন ।

স্থানীয়রা বলছেন, বৈলাজান গ্রামের কোরবানির মাঠটি পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ও ঐক্যের প্রতীক। সম্প্রীতি ধরে রাখতে দুটি ঈদগাহ ও সাতটি মসজিদ সমাজ নিয়ে এ কোরবানি মাঠ গঠিত। এ কোরবানির সমাজে এ বছর ১৫৩টি খাসি ও ৭৬টি গরুসহ ২২৯ টি পশু কোরবানি করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বৈলাজান কোরবানির মাঠে সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় পশু জবাই, গোশত প্রসেসিংয়ের কাজ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। পরে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে জমাকৃত তিনের একাংশ গোশত কোরবানি সমাজের ১৬২০টি খানার মধ্যে তা সমহারে বন্টন করে যার যার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এ উপলক্ষে মাঠে বিরাজ করে আনন্দ ঘন পরিবেশ। মাঠের এক পাশে বসে দোকান। সেখানে ছোট ছেলে মেয়েরা আনন্দ উল্লাস করে থাকে।

পঞ্চায়েত সভাপতির দায়িত্ব থাকা ইব্রাহিম মাস্টার বলেন, আমাদের এ কোরবানির মাঠ কবে থেকে শুরু হয়েছে তা আমরা কেউই বলতে পারব না। আমাদের পূর্বপুরুষরা এই মাঠে কুরবানি করেছেন। আমার দাদা করেছে আমার বাবা করেছে আমরাও কোরবানি করছি।

স্থানীয় হাফিজুল ইসলামসহ অন্যান্যরা বলেন, এই কোরবানির মাঠ আমাদের ঐতিহ্য। এটি আমাদের ভাতৃত্ববোধ ও ঐক্যের বন্ধনকে সুদৃড় করেছে। যুগযুগ ধরে এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমরা সকলেই বদ্ধপরিকর।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version