নিজস্ব প্রতিনিধি :

কালের বিবর্তনে আমাদের দেশে সোনালু গাছের দেখা এখন খুব একটা মেলে না। তবে যেখানে এই গাছ এখনো টিকে আছে, সেখানে বসন্ত ও গ্রীষ্মের সন্ধিক্ষণে হলুদ ফুলে প্রকৃতি যেন নতুন জীবন ফিরে পায়। রাস্তার পাশে ঝুলে থাকা ফুলের মালার মতো থোকাগুলো পথচারীদের চোখে এক শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়। ক্লান্ত মন ও শরীর যেন মুহূর্তেই প্রশান্তিতে ভরে ওঠে।

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে এখন প্রকৃতির এক অনন্য সৌন্দর্য ছড়িয়ে দিয়েছে সোনালু ফুল। গ্রীষ্মের দাবদাহের মধ্যে এই হলুদ রঙের ফুল যেন পথচারীদের ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়। উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশে, বাড়ির আঙিনায়, বিদ্যালয়ের চারপাশে, এমনকি ফাঁকা জমিতেও ফুটে উঠেছে সোনালু ফুলের মৃদু সৌন্দর্য। এই দৃশ্য শুধু চোখের আরাম নয়, বরং মানসিক প্রশান্তিরও এক বিরল উৎস হয়ে উঠেছে। সোনালু গাছ সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে ফুল ফোটায়।

সোনালু ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা তরুণী উম্মে কুলসুম বলেন, এ বছর একটু আগেভাগেই গাছগুলোতে ফুল এসেছে। সকাল-দুপুর-সন্ধ্যার সময়েই দেখা যায়, ঝুলন্ত সোনালি থোকা থোকা ফুল যেন পথচারীদের মুগ্ধ করে তোলে। বিশেষ করে পৌরশহরের রাস্তার দুই ধাওে এবং বেশির ভাগ গ্রামের রাস্তার দুই পাশে সোনালুর দৃশ্য পথচারীদের হাঁটাকে আনন্দদায়ক করে তুলেছে।

নিজপাড়া ইউনিয়নের গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজেন্দ্রনাথ বলেন, প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হলে এই গাছগুলোর নিচ দিয়ে হেঁটে যাই। গাঢ় সবুজ পাতার মাঝে হলুদ ফুলের ঝাড় দেখলেই মনটা হালকা হয়ে যায়।

গোলাপগঞ্জ বাজারের ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, এই গাছগুলোর নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় রোদ লাগলেও ক্লান্তি লাগে না। গন্ধটা খুব মিষ্টি, আর ফুলগুলো এমনভাবে ঝুলে থাকে যেন শীতল ছায়া দেয়।

বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, সোনালু গাছ শুধু পরিবেশ নয়, মানুষের মনের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমরা বিভিন্ন সড়কে এই গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছি যাতে ভবিষ্যতে আরও সুন্দর ও সবুজ পরিবেশ গড়ে তোলা যায়।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version