নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল ঘাট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে সিগারেট উৎপাদন করে আসছিল ‘রয়েল টোব্যাকো কোম্পানি’। 

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গত ১৯ মে যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। যেখানে র‍্যাব-১১, পুলিশ, আনসার, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং কাস্টমস কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী অভিযানে অংশ নেয়।

অভিযান চলাকালে কারখানা থেকে ১৪ হাজার প্যাকেট সিগারেট ও প্রায় ২১ লাখ টাকার পুরোনো রি-ইউজড স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়। সেগুলো ঘটনাস্থলেই আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। একইসাথে জেলা প্রশাসক মোবাইল কোর্ট তাৎক্ষণিক ৫ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করেন।

অভিযানকালে পুরোনো ব্যবহৃত ব্যান্ডরোল ও স্ট্যাম্প সংগ্রহ করে নতুন প্যাকেটের সিগারেটে লাগিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৬ লাখ টাকা, অর্থাৎ মাসে প্রায় ২ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছিল এমন প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। বিষয়টি আরও তদন্ত করার জন্য সম্প্রতি এনবিআরের অতিরিক্ত কমিশনার ড. মো. নেয়ামুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যদের টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানা যায়।  টিমকে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, অভিযান পরিচালনাকালে জব্দকৃত মালামাল হতে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ, সিদ্ধিরগঞ্জের একটি দল দুই প্যাকেট নমুনা (ব্যবহৃত ব্যান্ডরোল ও সিগারেট) এবং বিবৃতি সংগ্রহ করা হয়। উপর্যুক্ত বিষয়ে ভ্যাট আইনে ইতোমধ্যে মামলা এবং আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। তামাকজাত দ্রব্য হতে রাজস্ব আদায় সবসময় গুরুত্বপূর্ণ এবং এ খাতে জাল-জালিয়াতি, ফাঁকি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এ কারণে বিষয়টি আরও তদন্ত করার জন্য পাঁচ সদস্যদের টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানা যায়।

সূত্র আরও জানায়, রয়েল টোব্যাকো কোম্পানি ২০২১ সাল থেকে প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল এবং ৫০ শতাংশ সিগারেটে নতুন স্ট্যাম্পের পাশাপাশি ৫০ শতাংশে পুরোনো স্ট্যাম্প ব্যবহার করতো। ২০২৩ সালেও একই অপরাধে প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করা হয়েছিল, কিন্তু মাত্র সাতদিনের ব্যবধানে স্থানীয় প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সহায়তায় পুনরায় কারখানা চালু করে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version