রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাসভবনে হামলা ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একটি অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছে মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এতে মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

শুক্রবার দিবাগত রাতে অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পুলিশ। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপাত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জাতীয় ছাত্র সমাজের নেতা আরিফ আলী বাদী হয়ে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। আমরা তার অভিযোগপত্রটি নিয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আরিফ আলীর অভিযোগ, রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনিসহ জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় জি এম কাদেরের বাস ভবনে তাণ্ডবের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান এক ঘণ্টারও বেশি সময় বসিয়ে রেখে টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে ওসি মামলা রেকর্ড করতে পারবেন না বলে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। তার অভিযোগ, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে যেভাবে পুলিশ আওয়ামী লীগের কথা ছাড়া মামলা গ্রহণ করতো না। এখন ৫ আগস্টের পর আবারও একই কাজ করছে।

জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আরিফ আলী দাবি করেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রংপুরে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ জন্য ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ১৭ দিন কারাগারে আটক থাকার পর ৫ আগস্টে তিনি মুক্তি পান। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা রংপুরবাসী সবাই জানে। তা ছাড়া জাতীয় ছাত্র সমাজের নেতাকর্মীরা রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সামনের কাতারের যোদ্ধা ছিল।

ছাত্র সমাজের এই নেতা অভিযোগ করেন, শুক্রবার (২৯ মে) জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের ঢাকা থেকে রংপুরে আসেন। তিনি নগরীর সেনপাড়ায় তার পৈতৃক বাস ভবন স্কাইভিউতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনিও দলের চেয়ারম্যানের সফর সঙ্গী হিসেবে তার বাসভবনে ছিলেন। রাত ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বহিষ্কৃত কয়েকজনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা জি এম কাদেরের পৈতৃক নিবাস স্কাইভিউতে কাটা রাইফেল, ককটেলসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা জি এম কাদের যে কক্ষে ছিলেন সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন। জি এম কাদেরকে হত্যা করার উদ্দেশে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়। এ সময় বাস ভবনের সামনে থাকা মোটরসাইকেলে গান পাউডার ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাইফেল দিয়ে গুলি বর্ষণ করা হয়।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, কোতোয়ালি থানার ওসি মামলা না নিয়ে নানান টালবাহানা করেন। এত বড় ঘটনার যদি মামলা নেওয়া না হয় তাহলে আইনের শাসন থাকে কোথায়? আমরা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করব। হামলার ঘটনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশের ন্যায় রংপুরে শনিবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল করা হবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version