পাঠ্যক্রম, শিক্ষানীতি, শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, উচ্চশিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, মূল্যায়ন পদ্ধতি, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য বিষয়ে ৩০ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট)  জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরে সংগঠনটি। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, অভ্যুত্থানের এক বছর অতিক্রম করে দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পণের পর জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে শিক্ষা সংস্কার অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষা সংস্কার বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি দেখা যাচ্ছে না, যা ‘হতাশাজনক’।

তিনি অভিযোগ করেন, ২০১০ সালের শিক্ষানীতি ‘একপাক্ষিক ও দুরভিসন্ধিমূলক’ ছিল এবং এর মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষার মূল উৎখাতের নীলনকশা বাস্তবায়ন শুরু হয়। ফ্যাসিবাদের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করবে—এমন প্রত্যাশা থাকলেও সরকার ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে ফেরার ঘোষণা দিয়ে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ছাত্রশিবির শিক্ষার উন্নয়নে পূর্বে নানা সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও প্রকাশনার মাধ্যমে প্রস্তাবনা দিয়েছে। শিক্ষা কাঠামোয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক—এই তিন পক্ষেরই মূল প্রত্যাশা গুণগত শিক্ষা।

শিক্ষা সংস্কারের জন্য ছাত্রশিবিরের প্রস্তাবিত ৩০ দফার মধ্যে রয়েছে—

১. অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা কমিশন গঠন

২. জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তকরণ।

৩ . ইসলামী মূল্যবোধ ও নৈতিকতার সমন্বয়ে আধুনিক শিক্ষাক্রম প্রণয়ন।

৪. বহুমাত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ।

৫. বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত শিক্ষায় (STEM) অগ্রাধিকার পান।

৬.ভাষা শিক্ষা সংক্রান্ত

৭. সামরিক ও শারীরিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ

৮. শিক্ষা বাজেট অগ্রাধিকার।

৯. শিশুদের জন্য আনন্দদায়ক স্কুলিং পদক্ষেপ।

১০. উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক শিক্ষা আইন প্রণয়ন।

১১. স্বাধীন ও স্বতন্ত্র নিয়োগ কমিশন গঠন

১২. নারী শিক্ষার প্রসারে উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণ।

১৩. শিক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।

১৪. শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ আবাসন নিশ্চিত ও ব্যবস্থাপনায় আধুনিকীকরণ।

১৫. মানসিক স্বাস্থ্য সেবা ও কাউন্সেলিং ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।

১৬. শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষাঙ্গণ বাস্তবায়ন

১৭. যোগ্য ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ গঠন।

১৮. গবেষণামুখী উচ্চশিক্ষা।

১৯. মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা সংক্রান্ত।

২০. কারিগরি শিক্ষার মান বৃদ্ধি।

২১. মূল্যায়ন পদ্ধতির সংস্কার।

২২. শিক্ষক প্রশিক্ষণ কাঠামোর আধুনিকায়ন।

২৩. শিক্ষক মূল্যায়নের কার্যকর পদ্ধতি প্রবর্তন।

২৪. চাকরিতে সমান সুযোগ ও ন্যায়ভিত্তিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণ।

২৫. ছাত্ররাজনীতির যথাযথ চর্চা ও নিয়মিত ছাত্রসংসদ নির্বাচন আয়োজন।

২৬.  বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ।

২৭. পথশিশু ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মূলধারার শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তকরণ।

২৮. কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে বেকারত্ব হ্রাস।

২৯ . উপজাতি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার উন্নয়ন ও সমান অধিকার নিশ্চিতকরণ।

৩০. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিভাবক-অংশগ্রহণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version