বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটে যেন নতুন সূর্যোদয় ঘটিয়েছেন তরুণ পেসার মারুফা আক্তার। পাকিস্তানের বিপক্ষে আইসিসি নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই ইনিংসের প্রথম ওভারে টানা দুই উইকেট তুলে নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজের নামটা জোরালোভাবে জানান দিলেন এই প্রতিশ্রুতিশীল বোলার।
ম্যাচের শুরুতেই মারুফার আগুন ঝরানো স্পেলে পাকিস্তান ব্যাটিং লাইনআপ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। প্রথম ওভারের দুই পরপর ডেলিভারিতে তিনি বোল্ড করেন ওপেনার ওমাইমা সোহেল এবং দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সিদরা আমিনকে। তার এই বিধ্বংসী সূচনাতেই গতি পায় বাংলাদেশ, ১২৯ রানে পাকিস্তানকে অলআউট করে এবং ৩২ ওভারেই সাত উইকেটে জয় তুলে নেয় টাইগ্রেসরা।
স্পিননির্ভর বাংলাদেশ দলে একজন কার্যকর পেসার হিসেবে মারুফা এখন এক ব্যতিক্রম। সুইং ও গতির নিখুঁত সমন্বয়ে উইকেট ভাঙার ক্ষমতা তাক লাগিয়েছে ক্রিকেটবিশ্বকে। এমনকি পেস কিংবদন্তি লাসিথ মালিঙ্গাও সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসা করেছেন তাঁর ইনসুইঙ্গারের।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতিও উচ্ছ্বাস লুকাতে পারেননি মারুফাকে নিয়ে। তিনি বলেন, “আমি মনে করি মারুফার বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা নারী পেসার হওয়ার সম্ভাবনা আছে। অতীতেও অনেক ভালো পেসার ছিলেন, কিন্তু মারুফা যে এক্সপোজার পাচ্ছে, এমনটা আগে কেউ পায়নি।”
তবে তরুণ এই তারকাকে বাস্তবতায় রাখার পরামর্শও দিয়েছেন অধিনায়ক। তাঁর ভাষায়, “এখন মারুফার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিশ্বকাপে মনোযোগী থাকা। তাকে ঘিরে যা কিছু হচ্ছে, তাতে যেন পারফরম্যান্সে প্রভাব না পড়ে। নিজের প্রস্তুতি ও পরের ম্যাচের পারফরম্যান্সেই মনোযোগ দেওয়া উচিত।”
আজ আসামের গৌহাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। কলম্বোয় দুর্দান্ত সূচনার পর একাদশে বড় কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছেন জ্যোতি। তবে ইংল্যান্ডের ডানহাতি ব্যাটারদের কথা মাথায় রেখে কন্ডিশন অনুযায়ী কিছু পরিবর্তন আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
ইংল্যান্ডও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসে উজ্জীবিত। ফলে গৌহাটির ম্যাচটি দুই দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বাংলাদেশের স্বপ্নের সূচনা দেখে এখন চোখ কেবল ধারাবাহিকতা রক্ষার দিকে—বিশেষ করে মারুফা আক্তারের দুরন্ত গতির বলই এখন টাইগ্রেসদের প্রধান ভরসা।