ক্রীড়া ডেস্ক :
সিলেট টেস্টের প্রথম দিনে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্লেসিং মুজারাবানি এবং ওয়েলিংটন মাসাকাদজাদের সামনে পাত্তাই পাননি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। মুমিনুল হক এবং নাজমুল হোসেন শান্ত কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে টাইগাররা অলআউট হয়েছে ১৯১ রানে।
এদিকে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৭ রান নিয়ে দিনের খেলা শেষ করেছেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট ও বেন কারেন। বেনেট ৩৭ বলে ৪০ রানে অপরাজিত, কারেন ৪৯ বলে ১৭ রানে। প্রথম দিনে খেলা হয়েছে ৭৫.১ ওভার, জিম্বাবুয়ে পিছিয়ে ১২৪ রানে।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে একের পর এক সাজঘরে ফিরতে থাকেন ব্যাটাররা। যেন মাঠে থাকার চেয়ে সাজঘরে ফেরার বড্ড টান তাদের। এদিন টাইগাররা উইকেট হারিয়েছে জোড়ায় জোড়ায়। ছোটখাটো একটি জুটি দাঁড় করিয়ে একজন আউট হলেই আরও এক দুইজন সাজঘরে ফেরার মিছিলে যোগ দিয়েছেন। অদ্ভুতুড়ে শটে উইকেট বিসর্জন দিয়েছেন ব্যাখ্যাতীতভাবে। তাতে দলীয় স্কোর দুইশ ছোঁয়ার আগেই গুটিয়ে গেছে টাইগাররা।
শুরুতে মাহমুদুল হাসান জয় ও সাদমান ইসলাম ৩১ রান যোগ করার পর ১ রানের ব্যবধানে দুই ওপেনার বিদায় নেন। নবম ওভারে নিয়াউচি ৩১ রানের জুটি ভাঙেন। সেট হয়ে যাওয়া জয় উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেয়ার আগে ৩৫ বলে ১৪ রান করেন। এরপর সাদমানকেও সাজঘরের পথ দেখান নিয়াউচি। ২৩ বলে ১২ রান করে বেনেটের হাতে ক্যাচ দেন সাদমান ।
এদিকে অভিজ্ঞ মমিনুল হকের সঙ্গে জুটি গড়ে সেই বিপর্যয় সামাল দেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। মধ্যাহ্ন বিরতির পর মাঠে ফিরে ভালোই খেলছিলেন। এগিয়ে যাচ্ছিলেন অর্ধশতকের পথে। কিন্তু সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। ব্লেজিং মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরে লাফিয়ে ওঠা বলে বাজে শট খেলে উইকেট বিসর্জন দেন শান্ত। আউট হওয়ার আগে ৬৯ বলে ৬ চারে ৪০ রান করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। দলের সংগ্রহ তখন ৯৮ রান।
এরপর ক্রিজে এসে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন অভিজ্ঞ মুশফিকও। বাঁহাতি স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজার শর্ট বলে মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। দলীয় ১২৩ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় দল। মুশফিক ফিরেছেন ৪ রান করে।
তার বিদায়ের পর সাজঘরের পথ ধরেন সকাল থেকে একপ্রান্ত আগলে রাখা মমিনুল হকও। ক্যারিয়ারের ২২তম ফিফটি করা মুমিনুল ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন। ১০৫ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৫৬ রান করেছেন তিনি। পরের ওভারে মুজারাবানির শর্ট বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ৪ বলে ১ রান করা মিরাজ।
জাকের আলী লেজের ব্যাটারদের নিয়ে কিছু রান যোগ করেন। হাসান মাহমুদ ৩০ বলে ১৯ রান করেন। নবম উইকেট হিসেবে বিদায়ের আগে জাকের ৫৯ বলে ২৮ রান করেন। তাইজুল ৩ রান করে আউট হন। শেষ ব্যাটার হিসেবে নাহিদ রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন। খালেদ ৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে মুজারাবানি ও মাসাকাদজা ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। নিয়াউচি এবং মাধেভেরে বাকি ৪ উইকেট সমানভাবে ভাগ করে নেন।
ব্যাটিংয়ে নেমে ব্রায়ান বেনেট শুরু থেকেই চড়াও হন বাংলাদেশি বোলারদের ওপর। ৩৭ বলে ৪০ রান করে অপরাজিত আছেন তিনি। ৪৯ বলে ১৭ করে অপরাজিত আছেন বেন কারান।
প্রথম দিন খেলা হয়েছে কেবল ৭৫ ওভার ১ বল। আলোকস্বল্পতার কারণে নির্ধারিত ওভারের অনেক আগেই খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৬১ ওভারে ১৯১ (মাহমুদুল ১৪, সাদমান ১২, মুমিনুল ৫৬, নাজমুল ৪০, মুশফিক ৪, জাকের ২৮, মিরাজ ১, তাইজুল ৩, হাসান ১৯, খালেদ ৪*, নাহিদ রানা ০; মুজারাবানি ৩/৫০, মাসাকাদজা ৩/২১, মাধেভেরে ২/২, নিয়াউচি ২/৭৪, এনগারাভা ০/৩৭)।
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ১৪.১ ওভারে ৬৭/০ (বেনেট ৪০*, কারেন ১৭*; হাসান ০/১৬, নাহিদ রানা ০/২১, খালেদ ০/১১, মিরাজ ০/১০)।