আবহাওয়া ডেস্ক :
রাজধানী ঢাকার বায়ুমানে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। গতকাল শুক্রবার যেখানে ঢাকার বায়ুমান ছিল ১৩৪, আজ শনিবার তা ব্যাপক কমে নেমে এসেছে মাত্র ৫৪তে। অর্থাৎ, রাজধানী শহরের বায়ু আজ সহনীয় পর্যায়েই আছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বেশ খানিকটা বৃষ্টির পর ঢাকার বাতাসে এই উন্নতির দেখা মিলল।
আজ বাতাসের গুণমান সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স-একিউআইয়ের সকাল ৯টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ৫৪, যা সহনীয় মাত্রার বাতাসের নির্দেশক। এর আগে গত বৃহস্পতিবারও ৭৩ বায়ুমান নিয়ে ৪০তম অবস্থানে ছিল ঢাকা। এর আগে বেশ কয়েক দিন ধরেই সহনীয় পর্যায়ে ছিল ঢাকার বাতাস।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের তালিকা অনুসারে আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে আছে চীনের উহান, শহরটির বায়ুমান ২২৬। দ্বিতীয় স্থানে আছে পাকিস্তানের লাহোর, যার বায়ুমান ২০১। ১৮১ ও ১৭৪ বায়ুমান নিয়ে তালিকার শীর্ষ তিন ও চারে অবস্থান করছে যথাক্রমে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় এবং চীনের চংকিং। আজ শীর্ষ পাঁচ নম্বরে থাকা শহরটি হলো কাতারের রাজধানী দোহা।
বাতাসের গুণমান সূচক (একিউআই) দিয়ে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ-এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।