রাশিয়া ও রাশিয়া যুক্তরাজ্যে বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা ও গুপ্তহত্যার চেষ্টা করছে বলে সতর্ক করেছেন ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই ফাইভের প্রধান কেন ম্যাককালাম। মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের মধ্যে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) নিরাপত্তা বিষয়ক বার্ষিক সভায় এই সতর্কবার্তা দেন তিনি। খবর বিবিসির।
তিনি বলেন, দুই বছর আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের বিরোধিতা করায় রুশ গোয়েন্দা সংস্থা যুক্তরাজ্যজুড়ে ‘বেপরোয়া অগ্নিসংযোগ, নাশকতা ও আরও বিপজ্জনক কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল। ইরান ও রাশিয়ার দিক থেকে সেই চেষ্টা আরও বেড়েছে। ২০২২ সাল থেকে এমআই ফাইভ ইরানের ২০টি চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এমআই ফাইভের বেশিরভাগ কাজ এখনও ইসলামি চরমপন্থা এবং চরম ডানপন্থি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধেই পরিচালিত হয়। বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, তরুণরা ক্রমবর্ধমানভাবে অনলাইন চরমপন্থায় আকৃষ্ট হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে তদন্ত করা হয়েছে তাদের মধ্যে ১৩ শতাংশেরই বয়স ১৮ বছরের কম।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যে ক্ষুধায় ধুকছে ৩০ লাখ শিশু: গবেষণা
তিনি বলেন, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিস্ফোরক দিয়ে ‘ধ্বংসযজ্ঞ’ চালানোর ৪৩টি চক্রান্ত শেষ পর্যায়ে ভেস্তে দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় হুমকির বিষয়ে এমআই ফাইভের তদন্তের সংখ্যা ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানগুলোর মধ্যে ৭৫ শতাংশ ছিল ইসলামি চরমপন্থার বিরুদ্ধে। বাকি ২৫ শতাংশ ছিল যুক্তরাজ্যের চরম ডানপন্থীদের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
ম্যাককালাম বলেন, এমআই ফাইভকে মাথা খারাপ করে দেয়ার মতো ব্যাপক সংখ্যক ও বিচিত্র ধরনের চরম বিশ্বাস ও মতাদর্শের মোকাবেলা করতে হয়েছিল। তার কথায়, ‘এখানে আমার ক্যারিয়ারের প্রথম ২০ বছর সন্ত্রাসী হুমকিতে পরিপূর্ণ ছিল। সেসবের সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে একটি বড় ইউরোপীয় স্থলযুদ্ধের পটভূমিতে রাষ্ট্র-সমর্থিত হত্যাকাণ্ড এবং নাশকতার ষড়যন্ত্র।’
তিনি সতর্ক করেন, ‘ইউক্রেনকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের নেতৃস্থানীয় ভূমিকার কারণে আমরা এখন পুতিন সরকারের চক্ষুশুল হয়ে উঠেছি। ফলে যুক্তরাজ্যের মাটিতে আরও আগ্রাসন চালোনো হতে পারে।’ তার দাবি, যুক্তরাজ্যের প্রতি বর্তমান সন্ত্রাসের হুমকির মাত্রা যথেষ্ট বাস্তব, যার অর্থ আক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে।
ম্যাককালাম বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে যে ৭৫০ জনেরও বেশি রুশ কূটনীতিককে ইউরোপ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, ‘তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল গুপ্তচর। তার ভাষায়, এর ফলে রাশিয়ান গোয়েন্দা সংস্থার সক্ষমতা অনেক কমেছে। ব্রিটেন ও তার মিত্ররা যাদের রাশিয়ান গুপ্তচর বলে মনে হত, তাদের কূটনৈতিক ভিসা দিতেও প্রত্যাখ্যান করেছে।’