চট্টগ্রামে পূজা মণ্ডপে পূজা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তের অনুরোধেই ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেছিলেন চট্টগ্রাম কালচার একাডেমি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী। তাদের কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এ ঘটনায় সংগীত পরিবেশনকারী নুরুল ইসলাম, শহীদুল করিম নামে দুই মাদ্রাসা শিক্ষককে আটক করে পুলিশ।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ রইছ উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ রইছ উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাতে ঘটনার পর এক অভিযোনে সংগীত পরিবেশনকারী দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
আমরা বিষয়টির গভীরে গিয়ে ক্ষতিয়ে দেখছি। এর পেছনে কোনো অপতৎপরতার উদ্দেশ্য আছে কি না তা আমরা বের করার চেষ্টা করছি।
তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও বলেন তিনি।
‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনি ইসলাম’ এমন একটি ইসলামী সংগীত পূজা মণ্ডপে পরিবেশনের পর উত্তাল চট্টগ্রাম। নগরীর জেএমসেন হলে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামে একটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর ছয় সদস্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে মঞ্চে গানটি পরিবেশ করে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে সারা দেশে।
ক্ষোভ জানিয়ে রাতেই পূজা মণ্ডপে জড়ো হন চট্টগ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। পরে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েনের পর শান্ত হয় পরিবেশ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতারের ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক।
পরে নগরীর পুলিশ লাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগীত পরিবেশনকারীরা জানান, পূজা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তের অনুরোধেই তারা ইসলামী সংগীত গেয়েছেন।
এদিকে পূজা উদযাপন কমিটি বলছে, দাওয়াত দেয়া হয়নি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীকে। তারা নিজেরাই এসে শিডিউল দিয়ে গেছে গান গাওয়ার জন্য। তাদের মঞ্চে উঠতে দেওয়ায় সজল দত্তকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার অর্থ সম্পাদক শুকান্ত মহাজন টুটুল বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কাউকে দাওয়াত দেয়া হয়নি। তারা নিজেরাই এসে শিডিউল দিয়ে গেছে। বিষয়টি একটি বাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতা ফখরুল ইসলাম জানান, পূজা মণ্ডপের ঘটনায় কোনো ধরণের সম্পৃক্ততা নেই ছাত্র শিবিরের।
ঘটনার পর স্বাভাবিক নিয়মেই পূজা মণ্ডপে চলছে পূজা। নিরাপত্তায় মণ্ডপ ঘিরে রয়েছে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী।