চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল আজ। তবে নির্বাচন হচ্ছে না। ভোট ছাড়াই সমিতির ২১টি পদ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা।
আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের অভিযোগ, বাধার মুখে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের মনোনয়নপত্র নিতে পারেননি।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ছিল মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার শেষ দিন। প্রতিটি পদের বিপরীতে একজন করে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এদিন যাচাই-বাছাইয়ে তাদের প্রত্যেকের মনোনয়ন ফরম বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ ভোট ছাড়াই সব প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এটি সমিতির ১৩২ বছরের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা।
জানা গেছে, পদ ভাগাভাগিতে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা পেয়েছেন ১৪টি পদ। এর মধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সহ-সভাপতি রয়েছে। সহ-সভাপতি, সহ সাধারণ সম্পাদকসহ ৭টি পদ পেয়েছেন জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা।
আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে আবদুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক পদে হাসান আলী চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে কাজী মো. সিরু এবং সহ-সভাপতি পদে আলমগীর মোহাম্মদ ইউনুস নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
সহ-সম্পাদক পদে ফজলুল বারী, অর্থ সম্পাদক পদে আনোয়ার হোসেন, পাঠাগার সম্পাদক পদে তৌহিদুল ইসলাম, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে আবদুল জব্বার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে আশরাফী বিনতে মোতালেব এবং ক্রীড়া সম্পাদক পদে মঞ্জুর হোসেন নির্বাচিত হচ্ছেন।
এছাড়া সদস্য পদে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন আহসান উল্লাহ, আসমা খানম, বিবি ফাতেমা, মেজবাহ উল আলম, রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী, রাহিলা গুলশান শাহেদ হোসেন, হেলাল উদ্দিন, রোবায়তুল করিম ও মোহাম্মদ মোরশেদ ও সাজ্জাদ কামরুল হোসেন।
সভাপতি আবদুস সাত্তার বলেন, আইনজীবীদের কল্যাণ ও বারের দুর্নীতি রোধে কাজ করে যাব। রাজনীতি বারে আনব না।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী ও সভাপতি পদে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ বলেন, আইনজীবী সমিতির ৯৮ শতাংশ সদস্যই ভোট দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভোটের ওপর আস্থা না থাকা কয়েকজন সমিতির সোনালি ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হতে তারা এমনটি করেছে। আওয়ামী লীগপন্থি ও এলডিপিপন্থি আইনজীবীকে তারা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে দেয়নি। আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কোনো সুরাহা মেলেনি।
মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা তারিক আহমেদ বলেন, প্রত্যেক পদের বিপরীতে একজন করে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। যাচাই-বাছাই করে এগুলো সঠিক পাওয়া গেছে। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
জানা গেছে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই ৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন পরিচালনায় গঠন করা কমিটির মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলায়মানসহ পাঁচ কর্মকর্তা একযোগে পদত্যাগ করেন। নির্বাচন নিয়ে বিএনপি-জামায়াত ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করেই এ ঘটনা ঘটে।
১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতিতে পাঁচ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি গঠিত হয়। দুই মাসের মধ্যে তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়। গত মঙ্গলবার জেলা আইনজীবী সমিতির তফসিল ঘোষণা করা হয়।