সময় সমাচার ডেস্ক :
ছাত্র-জনতার ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এখন চরম প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। নিষিদ্ধ রয়েছে দলটির যাবতীয় কার্যক্রম।
নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী দলটি।
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বড় একটি অংশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়ে কারাবন্দি রয়েছেন শীর্ষ পর্যায়ের বহু নেতা ও তাদের সরকারের সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা। বিদেশে পাড়ি জমানো আওয়ামী লীগ নেতাদের কেউ কেউ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, বেলজিয়াম, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তবে অধিকাংশ নেতা পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ভারতে। তারা দিল্লি, কলকাতা, শিলং, আগরতলা, শিলিগুড়িসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে অবস্থান করছেন।
ভারতে পালিয়ে যাওয়া নেতাকর্মীদের মধ্যে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও রয়েছেন। দেশে রয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের নেতাকার্মীরা হয় আত্মগোপনে রয়েছেন, নয় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তৃণমূলের কোনো কোনো কর্মী মাঝেমধ্যে ঝটিকা মিছিল করলেও পুলিশ ভিডিও দেখে পরবর্তীতে তাদের আটক করছে।
শুধু তাই নয়, আইন সংশোধনের পর ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারের মুখে রয়েছে দলটি। অথচ মুক্তিযুদ্ধসহ এই দলের রয়েছে বর্ণাঢ্য ইতিহাস। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে বিরোধীদের ওপর ব্যাপক দমনপীড়ন, গুম, খুন, নির্যাতন এবং সবশেষ গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন চালায় আওয়ামী লীগ।
এর ফলে দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং নিবন্ধন স্থগিত করায় এখন তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নির্বাচনে তারা (আওয়ামী লীগ) থাকবে কি না, সেটা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
এদিকে বেশ কিছু দিন ধরে দলের বর্তমান নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে একটি রিফাইন্ড বা পরিশুদ্ধ আওয়ামী লীগের আলোচনা সামনে এসেছে। যদিও এটাকে দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে মনে করছিল আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে দলের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলের মূল নেতৃত্বকে মাইনাস করা বা বাদ দেওয়াই এর উদ্দেশ্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের এই বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আওয়ামী লীগ অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে অগ্রসর হয়েছে। আওয়ামী লীগের পথ চলা অধিকাংশ সময়ই প্রতিকুল ছিল বলা যায়। প্রতিকূলতা পেরিয়েই বাংলাদেশের অর্জন ও সফলতা আওয়ামী লীগের হাত ধরে এসেছে। যদিও বর্তমান সময়ের বিপর্যয় দলের ইতিহাসের অনেক কঠিন ও বড় বিপর্যয়। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের দল। এ বিপর্যয় কাটিয়ে আওয়ামী লীগ আবারও এদেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাবে।