নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের রিপোর্টকে ঘিরে নারীদের প্রতি অবমাননাকর ভাষা প্রয়োগের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন।
মঙ্গলবার (৬ মে) এক বিবৃতিতে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এই নিন্দা জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সংঘবদ্ধভাবে অন্যায্য দাবি জানালেই কেবল সংখ্যার জোরে দাবির ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হয় না। মব সৃষ্টির মানসিকতা গণতান্ত্রিক নয় এবং এটি ফ্যাসিবাদী পদ্ধতি। নারীর মর্যাদা, আইনগত অধিকার ও সুরক্ষা এখনো বাংলাদেশে নিশ্চিত হয়নি। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট সেই বৈষম্য কমাতে সহায়ক হবে বলে গণসংহতি আন্দোলন আশা করে।
তারা বলেন, কমিশনের কিছু সুপারিশ অত্যন্ত জরুরি হলেও কয়েকটি বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আলোচনা করে সুপারিশগুলোকে প্রতিনিধিত্বমূলক করে তোলা উচিত। কোনো কমিশন বাতিল নয় বরং অংশগ্রহণমূলক ও সবার জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলা প্রয়োজন।
গণসংহতি আন্দোলন জানায়, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত নারীরা সবসময় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন। তাদের নিরাপত্তা, কর্মস্থলে সুরক্ষা এবং অবসরকালীন জীবনের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে হবে। সামাজিক ও আইনি সুরক্ষাবলয়ের বিবেচনায় নারীই সবক্ষেত্রে অধিকতর অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে আছে।
ব্যক্তিগত, পেশাগত, ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক সব দৃষ্টিকোণ থেকেই নারীর জীবনকে মর্যাদাপূর্ণ, মানবিক, ও নিরাপদ করার জন্য নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন যেসব সুপারিশ দিয়েছে, আমরা সেগুলোকে যথাযথভাবে বাস্তবায়নের দাবি জানাই। পাশাপাশি, সুপারিশগুলো নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আলোচনা এবং আরও যেসব প্রস্তাবনা এতে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার, সে বিষয়েও সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
একইসঙ্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা বিভাজনের রাজনীতিকে পেছনে ফেলে আসার সুযোগ পেয়েছি। বহুবার বহুভাবে এদেশের মানুষকে বিভাজিত করে পরস্পরের প্রতি আক্রমণাত্মক ও হিংসাত্মক অবস্থায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে- যার পরিণতি হলো ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন।
আমরা কোনোভাবেই এই ধরনের বিভাজনের পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। যারা সংঘবদ্ধভাবে নারীর প্রতি সহিংস ভাষা প্রয়োগ করছেন, তাদেরকে আমরা আহ্বান জানাই, নতুন করে দেশের মানুষকে বিভাজিত না করে বরং গঠনমূলক আলোচনার পথ তৈরি করুন। নারীর প্রতি সহিংস ভাষা ও মনোভাব কখনোই ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে না।
তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, নারীর মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নিতে এবং সংস্কারের সব সিদ্ধান্তকে প্রতিনিধিত্বমূলক করে তোলার জন্য।