মেহজাবীন চৌধুরী।
প্রথমবারের মতো টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশের সিনেমা ‘সাবা’। জানা গেছে, সিনেমাটি নিয়ে প্রবাসী দর্শকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক দর্শক ও সমালোচকদের আগ্রহ ছিল অনেক বেশি। যে কারণে ‘সাবা’র প্রিমিয়ারে পরে বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমের মুখোমুখি হতে হয় অভিনেত্রী মেহজাবীনদের।
সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেহজাবীন বলেন, ‘একজন অভিনেত্রী এটাই চান যে পর্দার চরিত্রের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া যায় বা আঁকড়ে ধরা যায় এমন চরিত্রে রূপ দেওয়া। এ ধরনের চরিত্রে আমি আগে অভিনয় করিনি। যে কারণে সাবা চরিত্রটি ছিল আমার জন্য একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা। এই চরিত্র আমার জন্য প্রথম এবং নতুন অভিজ্ঞতা।’
পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক মায়ের প্রতি মেয়ের যত্নশীল এই চরিত্রটি ছিল মেহজাবীনের কাছে আবেগের নাম। অভিনয়ের সময়েও যেমন তিনি আবেগাপ্লুত হয়েছেন, তেমন সিনেমাটি দেখেও অনেক দর্শকের সঙ্গে কেঁদেছেন। যে কারণে তাঁর চরিত্রকে অনেক সাহসী হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন এই অভিনেত্রী।
মেহজাবীন বলেন, ‘সিনেমাটির জন্য অনেক রিহার্সাল করেছি। কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। এটা একই সঙ্গে আমার পরিচালকের শাশুড়ির কথা, চিত্রনাট্যকারের মায়ের গল্প। যে কারণে অনেক গভীরভাবে চরিত্র সম্পর্ককে আলোচনা করতে পেরেছি।’
‘চিত্রনাট্য পড়ে কি আপনার মনে হয়েছিল এই চরিত্রটিই আপনার জন্য?’ এমন প্রশ্নে মেহজাবীন বলেন, ‘অনেকটাই সে রকম। ১২ বছর ধরে আমি বিভিন্ন রকম নাটকের চরিত্রে অভিনয় করেছি। কিন্তু আমি এই সময়ে কখনোই সিনেমার গল্প পছন্দ করিনি। আমি সব সময়ই অপেক্ষা করেছি এ রকম একটি চরিত্রের জন্য, যে চরিত্রটি ভার বহন করে। যেটা হবে একেবারেই আলাদা। যে চরিত্রে দর্শক আগে আমাকে দেখেননি, সেটাই বলবেন দর্শক। পরে পরিচালক মাকসুদের প্রস্তাব ও সিনেমাটি নিয়ে আত্মবিশ্বাস আমাকে আকৃষ্ট করেছে।’
একসময় সিনেমার জন্য বড় সময় নাটক থেকে বিরতি নেন। যা দর্শকদের বুঝতে দেননি। ‘সাবা’ হয়ে ওঠার পেছনের এই গল্পটি নিয়ে মেহজাবীন বলেন, ‘সাবার চিত্রনাট্য পড়ে অন্য রকম অনুভূতি হয়। সাবা এমন একটা মেয়ে, যে অনেক সাহসী। সিনেমাটি দেখলেই বুঝবেন। আমি কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে এতটা সাহসী নই। এটা আগেই বলে রাখলাম। পরে আমাকে চরিত্রের জন্য সাহসী ভূমিকা নিতে হয়েছে (হাসি)। এই সাহসকে প্রত্যক্ষ করার জন্যই চরিত্র আমাকে আরও বেশি টানে। আসলে বাস্তবে আমি এতটা সাহসী নই।’
কোলাইডারের এই সাক্ষাৎকারে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনেমার পরিচালক মাকসুদ হোসাইন, অভিনেতা মোস্তফা মন্ওয়ার। এবার টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ ডিসকভারি প্রোগ্রামে নির্বাচিত হয়েছিল সিনেমাটি। এই বিভাগে আরও ২৩টি সিনেমা জায়গা করে নেয়। পরিচালক মাকসুদ জানান, সিনেমাটি এবার বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে এশিয়ান প্রিমিয়ার হবে। আগামীকাল থেকে ২৯তম বুসান উৎসব চলবে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত। উৎসবে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তাঁদের।