ওয়ানডে ফরম্যাটে যে তারা এখনও ফুরিয়ে যাননি—সিডনিতে আরও একবার প্রমাণ করলেন ভারতের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা।

শনিবারের ম্যাচে রোহিতের তুলনায় কোহলির ওপর ছিল চাপ কিছুটা বেশি। কিন্তু চাপের মুখে নিজের সেরাটা বের করে আনার অভ্যাস তাঁর পুরনো। সিডনিতেও দেখা গেল সেই দৃঢ়তার ঝলক—শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ভারতকে জেতালেন, রোহিতের সঙ্গে গড়লেন দেড়শোর বেশি রানের জুটি। ম্যাচ শেষে কোহলি বললেন, “ক্রিকেট প্রতি মুহূর্তেই শিখিয়ে যায়।”

আগের দুই ম্যাচে টানা শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন তিনি। পার্থে মাত্র আট বল খেলেই অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দেন। অ্যাডিলেডে খেলেন চার বল—তরুণ বার্টলেটের ইনসুইংয়ে এলবিডব্লিউ। ফলত, আজকের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডের আগে তাঁর ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল জোরেশোরে। অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন—২০২৭ বিশ্বকাপের আগে কি তবে কোহলির অধ্যায় শেষ হতে চলেছে?

কিন্তু কোহলি নিজের জবাব দিয়েছেন ব্যাট হাতে। ৮১ বলে ৭৪ রানের পরিণত ইনিংস, রোহিতের সঙ্গে ১৬৮ রানের দুর্দান্ত জুটি—সব প্রশ্নের উত্তর যেন মিলল সেখানেই।

ম্যাচ শেষে কোহলি বলছিলেন, “তুমি যত ক্রিকেটই খেলো না কেন, এই খেলা সবসময় কিছু না কিছু শেখায়। আমি প্রায় ৩৭ বছরের হতে চলেছি, তবু রান তাড়া করাটা এখনো আমার মধ্যে থেকে সেরাটা বের করে আনে। সময় খারাপ গেলে খেলাটা চ্যালেঞ্জিং হয়, কিন্তু কঠিন সময়ই আমাকে আরও শক্ত করে তোলে।”

অস্ট্রেলিয়ার মাঠে আর হয়তো রোহিত-কোহলি যুগলবন্দি দেখা যাবে না। তাঁদের বিদায় জানাতে গ্যালারি ভরেছিল দর্শকে। কোহলি আবেগভরা কণ্ঠে বললেন, “আমরা এই দেশটায় খেলতে ভালোবাসি। আমাদের ক্যারিয়ারের সেরা ক্রিকেটগুলোর কিছু এখানেই খেলেছি। আপনাদের সমর্থন অনবদ্য।”

রোহিতের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে কোহলি আরও বলেন, “আসলে আমরা দু’জনেই ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে খেলতে শিখেছি। ২০১৩ সালে এই অস্ট্রেলিয়াতেই আমাদের জুটি প্রথম গড়ে ওঠে। আমরা জানি, একসঙ্গে ২০ ওভার টিকে গেলে বড় পার্টনারশিপ গড়া যায়, আর তখন যেকোনো ম্যাচ জেতানো সম্ভব। প্রতিপক্ষ দলও সেটা জানে।”

এক কথায়— সিডনিতে রোহিত-কোহলির ব্যাটে আবারও ফিরে এল ভারতের পুরনো ছন্দ, আর প্রমাণ হলো—‘রো-কো যুগ’ এখনো শেষ হয়নি।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version