রাশিয়ার সাথে ২০ বছর মেয়াদি কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইরান।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে এ চুক্তি। 

গত জুলাই মাসে ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। তারপর বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো রাশিয়া সফরে আসেন তিনি। স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় আগামী ২০ বছর প্রতিরক্ষা, সামরিক মহড়া, যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণ, যুদ্ধজাহাজ তৈরিসহ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন খাতে পারস্কপরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে ২ দেশ।

চুক্তি স্বাক্ষরের পর এক উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়ায় পেজেশকিয়ান বলেন, “আমরা একটি বহুকেন্দ্রিক বিশ্ব প্রতিষ্ঠার পথে এগোতে চাই এবং এই পথের একটি উদ্দীপক পদক্ষেপ হলো এই চুক্তি।”

অন্যদিকে পুতিন বলেন, “এই চুক্তির ফলে শুধু নিরাপত্তা খাতই নয়, বরং অর্থনীতি ও বাণিজ্যখাতেও দুই দেশের সহযোগিতামূলক তৎপরতা অনেক বৃদ্ধি পাবে। কারণ এই কৌশলগত চুক্তির একটি শর্ত হলো— এখন থেকে উভয় দেশের যাবতীয় অর্থনৈতিক আদান প্রদান দুই দেশের নিজ নিজ মুদ্রায় হবে।”

“এখন আমদের প্রয়োজন আমলাতন্ত্রের প্রভাব কমানো এবং সত্যিকার গঠনমূলক কার্যক্রম বাড়ানো। কেবল তাহলেই অন্যরা যেসব প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে, সেসব আমরা অতিক্রম করতে পারব।”

প্রসঙ্গত, ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার মিত্রতা দীর্ঘদিন। তবে পারমাণবিক অস্ত্র প্রকল্প ইস্যুতে ইরানের বিরুদ্ধে এবং ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অভিযানের জেরে রাশিয়া বিরুদ্ধে গত কয়েক বছরে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর সেসব নিষেধাজ্ঞাই আরও কাছাকাছি এনেছে মস্কো-তেহরানকে।

২০২৪ সালে ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানের তৈরি ড্রোন ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছে রুশ সেনাবাহিনী। গত সেপ্টেম্বরে রাশিয়াকে স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইরান সরবরাহ করেছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বিনিময়ে তেহরানকে এস ৩০০ এবং এস ৪০০ এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেম এবং আধুনিক যুদ্ধ বিমান দিয়েছে মস্কো।

এমন এক সময়ে এই চুক্তি স্বাক্ষর করল মস্কো এবং তেহরান, যখন নিজেদের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার জেরে মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধাক্কা পেয়েছে রাশিয়া ও ইরান।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version