ফুটবল দুনিয়ায় কার্লো আনচেলত্তির সামনে যেন এক অনিবার্য প্রশ্ন— নেইমার জুনিয়রকে কবে দেখা যাবে আবার ব্রাজিল জাতীয় দলে? আনচেলত্তি সবসময়ই একই উত্তর দেন: “ও সম্পূর্ণ ফিট হলেই তাকে ডাকবো।” কিন্তু স্কোয়াড ঘোষণার সময় এলেই নেইমারের পুরোনো দুঃস্বপ্ন—চোট—আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। নতুন বছর শুরু হওয়ার আগেই আরেকটি ইনজুরিতে পড়ে আবারও অনিশ্চয়তার ঘরে ফেরত পাঠাল তারকা ফরোয়ার্ডকে।
ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবো জানায়, বাঁ পায়ের হাঁটুর সাম্প্রতিক চোটের কারণে ২০২৫ সালের বাকি সময় মাঠে ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ নেইমারের। ব্রাজিলিয়ান লিগ ব্রাজিলেইরাওতে সান্তোসের এখনও তিনটি ম্যাচ বাকি, কিন্তু নেইমারের নাম সেখানে থাকাটা এখন স্বপ্নের মতোই।
গত ১৯ নভেম্বর মিরাসলের বিপক্ষে ম্যাচে চোট পান নেইমার। এর ফলে ইন্টারন্যাসিওনালের বিপক্ষে সোমবারের ম্যাচটিতে নামতে পারেননি তিনি। চোটের গুরুত্ব নির্ধারণে মঙ্গলবার তাকে বিস্তারিত পরীক্ষা করানো হয়। জাতীয় দলের হয়ে নেইমারের সর্বশেষ ম্যাচটি ২০২৩ সালের অক্টোবরে। সে সময় তিনি ভয়ংকর এসিএল (অ্যান্টেরিওর ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট) চোটে পড়ে প্রায় এক বছর মাঠের বাইরে ছিলেন। এরপর আল হিলাল ছেড়ে সান্তোসে ফিরলেও জাতীয় দলে ফেরা হয়নি—কারণ সেই একই সমস্যা: ইনজুরি।
এই বছরই চারবার চোটে পড়েছেন নেইমার। জানুয়ারিতে সান্তোসে যোগ দেওয়ার পর মার্চে বাঁ পায়ের ঊরুর চোটে পোলিস্তায় সেমিফাইনাল মিস করেন। এপ্রিলে ফের একই জায়গায় মাংসপেশির আঘাত পান। সেপ্টেম্বরে ডান ঊরুতে গ্রেড-২ চোট। আর নভেম্বরের সর্বশেষ চোট—বাঁ পায়ের হাঁটু। ইনজুরিতে দফায় দফায় মাঠ ছাড়তে হওয়ায় পুরো বছরে মাত্র ২৫টি ম্যাচ খেলতে পেরেছেন, গোল করেছেন ৭টি। নিয়মিত চোট সান্তোসের সঙ্গে তার নতুন চুক্তির পথেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডিসেম্বরেই শেষ হচ্ছে বর্তমান চুক্তি।
এদিকে দলের পারফরম্যান্সও শঙ্কাজনক। রেলিগেশনের ঝুঁকিতে থাকা সান্তোস নেইমারের পরিস্থিতি নিয়ে দোটানায়। ক্লাব সভাপতি মার্সেলো টেক্সেইরা জানান, “পরীক্ষার রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। মেডিক্যাল দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে যত দ্রুত সম্ভব ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। আগামী সকালে পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে বোঝা যাবে।”
২০২৬ বিশ্বকাপ সামনে রেখে আনচেলত্তির হাতে প্রস্তুতির জন্য মাত্র কয়েকটি প্রীতি ম্যাচ আছে। ব্রাজিলের মার্চের আগে আর কোনো ম্যাচ নেই। তাই জাতীয় দলে ফেরার জন্য নেইমারের একমাত্র ভরসা—সান্তোসের জার্সিতে নিয়মিত খেলা। কিন্তু নতুন চোট তার সেই পথ আরও কঠিন করে তুলেছে। প্রীতি ম্যাচের দলে জায়গা না পেলে নেইমারের চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নটিও হাতছাড়া হতে পারে।


