১৬৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শেষ ওভারে জয় পেতে নাটকীয় পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। হাতে ছিল ৬ উইকেট, প্রয়োজন মাত্র ৫ রান। শ্রীলঙ্কার বোলার দাসুন শানাকার করা ওভারের প্রথম বলেই চার মেরে স্কোর সমান করেন জাকের আলী। অথচ বাকি ৫ বলে মাত্র ১ রান তুলতে গিয়েই হিমশিম খায় টাইগাররা, হারায় দুই উইকেটও। তবে শেষ পর্যন্ত এক বল আগেই সুপার ফোর পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচের জয় নিশ্চিত করেন লিটন দাসরা।
এই জয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় সাইফ হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। দুজনেই অর্ধশতক হাঁকিয়ে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন। তবে শুধু ব্যাটাররা নয়, বোলারদেরও সমান কৃতিত্ব দিচ্ছেন অধিনায়ক লিটন দাস। বিশেষ করে মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের শেষ দুই ওভারকে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলে মনে করছেন তিনি।
লিটনের বলেন, “আমরা সবাই জানি, প্রতিপক্ষের জন্য মুস্তাফিজ কতটা ভয়ংকর। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো ছিল। আমি মনে করি, মুস্তাফিজের ১৯তম এবং তাসকিনের ২০তম ওভার ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছে। এর আগে মনে হচ্ছিল, তারা ১৯০ করে ফেলবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রানটা কম রাখতে পেরেছে।”
ইনিংসের ১৮ ওভার শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ১৫৩ রান। শরিফুল ইসলামের এক ওভারেই ১৮ রান তুলে নিয়েছিলেন শানাকা ও আশালঙ্কা। তখনই ম্যাচ পাল্টে দেন মুস্তাফিজ। ১৯তম ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট (রান আউটসহ ৩ উইকেট)। এতে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সাকিব আল হাসানের সর্বোচ্চ ১৪৯ উইকেটের রেকর্ডে ভাগ বসান তিনি। পরে শেষ ওভারে তাসকিন দেন মাত্র ১০ রান। ফলে লঙ্কানদের রান থেমে যায় নাগালের মধ্যেই।
এরপর ব্যাট হাতে দায়িত্ব নেন সাইফ হাসান। দ্বিতীয় উইকেটে লিটনের সঙ্গে যোগ করেন ৫৯ রান, আর তৃতীয় উইকেটে তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে জুটি গড়ে তোলেন ৫৪ রান। ৪৫ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করার ভিত্তি গড়ে দেন তিনি।
নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে সাইফ বলেন, “ভিন্ন কিছু নয়। আমি শুধু নিজের প্রক্রিয়াটা ঠিক রেখেছি। প্রস্তুতি খুব ভালো ছিল। আমরা আগের দিন ভালো একটা সেশন কাটিয়েছি, তাদের বোলারদের বিপক্ষে ভালো পরিকল্পনা করেছি, যা কাজে দিয়েছে।”
সাইফকে নিয়ে প্রশংসা করে লিটন বলেন, “আমি জানি, বাংলাদেশের হয়ে ম্যাচ জেতাতে পারে সাইফ। এশিয়া কাপে যখন তাকে দলে নিই, সবাই জানতাম সে ভালো করবে, বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সে যেভাবে রান করেছে, এতে ব্যাটিংটা অনেক সহজ হয়েছে।”
লঙ্কানদের বিপক্ষে এই জয় পরের ম্যাচগুলোতেও আত্মবিশ্বাস যোগাবে বলে মনে করেন লিটন,
“এমন ম্যাচে রান তাড়া করে জিতলে দল হিসেবে অবশ্যই উজ্জীবিত থাকা যায়। তবে সামনে আমাদের নতুন প্রতিপক্ষ, নতুন দিন। তাই আবারও সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে।”