রাত পেরিয়ে সকালেও রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙা চলছে। ছাত্র-জনতা লাঠি ও হাত দিয়েই চালিয়ে যাচ্ছেন অবশিষ্টাংশ ভাঙার কাজ।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। এসময় বাড়িটির কিছু জায়গায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। বাড়ির বিভিন্ন অংশে লাল কালি দিয়ে লেখা ছিল, ‘স্বৈরাচার সাবধান।’
এদিন সকালে দেখা যায়, ভারি যন্ত্রপাতি নিয়ে চলছে ভাঙার কাজ। বাড়ির সামনের দিকের অংশ ইতিমধ্যে ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। চলছে বাকি অংশ ভাঙার কাজও। রাতে আসা ছাত্র-জনতা এখনো অবস্থান করছেন বাড়িটির সামনে।
বাড়িটির ধসে পড়া ছাদ ও রেলিংয়ের ভাঙা অংশ থেকে বেরিয়ে আসা রড সংগ্রহের চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। হাতুড়ি পিটিয়ে ভাঙার চেষ্টা করছেন ধসে পড়া ছাদও । কেউ কেউ কুড়িয়ে নিচ্ছেন এখানে-সেখানে পড়ে থাকা লোহার রড ও ইস্পাতের অংশ।
এসময় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে রাতে যারা ছিলেন তাদের অনেককেই সকালেও বাড়ির সামনে দেখা যায়। দেখা যায় সকালে ফজরের নামাজ পড়ে ভিড় করতে বাড়িটির সামনে। আশেপাশের রাস্তা দিয়ে চলা মানুষজনও উঁকি দিয়ে দেখতে দেখা যায় বাড়িটি কে।
উপস্থিত ছাত্র-জনতা বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংস করে গেছে। তারা দেশ থেকে পালিয়েছে কিন্তু এখনো দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা এখনো আইনের আওতায় আসছে না। দেশের ভিতরে ও বাহির থেকে ষড়যন্ত্র করার সাহস করছে। আমরা তাই বাড়ি গুড়িয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারের চিহ্ন নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাই। এই দেশে আর কোন স্বৈরাচারকে আমরা স্থান দিব না।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। অভ্যুত্থানের ছয় মাস পর বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করার ঘোষণা দেয়া হয়। এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল দিনভরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উত্তেজনা চলে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেক ছাত্র-জনতা ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফেসবুকে ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিল’ এবং ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচির ডাক দেন।
পরে রাত ৮টার দিকে ভারতে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।