এবার গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন পুলিশের ৪০তম ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) ব্যাচ থেকে অব্যাহতি প্রাপ্তরা।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে ১নং গেটের বিপরীতে উসমানী উদ্যান সংলগ্ন রাস্তায় অনশন কর্মসূচি পালন করছেন অব্যাহতি পাওয়া ক্যাডেট এসআইরা।
অব্যাহতি পাওয়া ক্যাডেট এসআই নিশিকান্ত গণমাধ্যমকে বলেন, মনে হচ্ছে আমাদের কোনো অভিভাবক নেই। রাষ্ট্র আমাদের নাগরিক মনে করে কি না জানি না। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি চলতে থাকবে। ৪৩তম বিসিএসে যারা বঞ্চিত তাদের দাবিগুলো পুলিশের মাধ্যমে ভেতরে পোঁছাচ্ছে কিন্তু আমাদের মেসেজগুলো সেভাবে পোঁছাচ্ছে কি না জানি না।
অব্যাহতি পাওয়া ক্যাডেট এসআই রবিউল রবি বলেন, আমাদের যেন দেখার কেউ নেই। আমাদের ভাইয়েরা-বোনেরা যোগ্যতার মাপকাঠিতে টিকে একটি চাকরি পেয়েছে। আজ তারা ঢাকার রাস্তায় এ শীতে জবুথবু হয়ে অনশন পালন করছেন। এরপরও কি আমাদের প্রতি রাষ্ট্রের দয়া হয় না?
তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার) আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে গিয়েছিলাম কিন্তু সেখানে কথা বলতে পারিনি।
সুবীর নামে অব্যাহতি পাওয়া আরেক ক্যাডেট এসআই বলেন, একটা চাকরির জন্য আজ আমরা রাস্তায়। আমাদের কি দোষে এত বড় শাস্তি দিচ্ছে জানি না। আমাদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। আমরা এখনো অনশন করছি। দাবি পূর্ণ না হওয়া অবধি এটা চলবে। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি এখনো নির্ধারিত হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা চাই এর একটা যথাযথ সুরাহা হোক, এ যন্ত্রণার অবসান হোক।
এর আগে রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ৩১০ এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অব্যাহতি দিয়ে ক্যাডেট এসআইদের যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল তাতে বলা হয়েছিল– আপনি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৪০তম ক্যাডেট এসআই/২০২৩ ব্যাচে গত ২০২৩ সালে ৫ মে এক বছর মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণরত আছেন। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি প্যারেড মাঠে গত ১ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিট থেকে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) প্রফেশনালস ব্যাচ-২০২৩ এর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুশীলন প্যারেড কার্যক্রম চলমান ছিল। এসময়ে পুলিশ একাডেমি কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত মেন্যু অনুযায়ী প্যারেডে অংশগ্রহণকারী সব প্রশিক্ষণার্থীকে প্যারেড বিরতিতে সকালের নাশতা পরিবেশন করা হয়। কিন্তু আপনি (প্রশিক্ষণার্থী এসআই) ওই সরবরাহ করা নাশতা না খেয়ে হৈচৈ করে মাঠে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেন। আপনি অন্য প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের পরস্পর সংগঠিত করে একাডেমি কর্তৃপক্ষকে হেয়প্রতিপন্ন করে চরম বিশৃঙ্খলা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন। এছাড়াও আপনি অন্যদের সঙ্গে হৈচৈ করতে করতে নিজের খেয়াল খুশিমতো প্রশিক্ষণ মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যান।