কোনো একটি দল বা তিনটি দল না চাইলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) আটকে দেওয়াটা ইনজাস্টিস বা বৈষম্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।

তিনি বলেছেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে মেজরিটি দল পক্ষে আছে। কোনো এক জায়গায় একটা সলিউশন বের করতে হবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার বিরতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট নতুনভাবে ইন্ট্রোডিউস করার প্রস্তাব হচ্ছে। তবে পৃথিবীতে এটা নতুন নয়, বহু দেশে এই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট আছে, চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স করার জন্য। আজকে কিছু সংখ্যক দল ছাড়া সবাই আমরা একমত হয়েছি যে দ্বিকক্ষ পার্লামেন্ট চাই। দ্বিকক্ষ পার্লামেন্ট চায় না, এমন বোধহয় একটি বা দুটি দল বলেছে, আর সবাই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের পক্ষে। তবে কিছুটা ডিফারেন্স হচ্ছে এটা ফরমেশন বিষয় নিয়ে যেমন— কীভাবে এটা ফর্ম করবে এবং এটার ফাংশন কী হবে? সে নিয়ে কমিশনের প্রস্তাব আসছে। এগুলো কনক্লুড করা হয়েছে। কমিশন সব শুনেছে ও বক্তব্য রেখেছে এবং কমিশন বলেছেন, আগামী রোববার কমিশনই এ বিষয়টা চূড়ান্ত করবে। কমিশন এটা ফাইনাল সিদ্ধান্ত আকারে পেশ করবে, আলোচনা আকারে নয়।

জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, সংবিধান সংশোধন একটু কঠিন করা এবং কোনো একক দল থেকে সংবিধান সংশোধন ইচ্ছেমতো করতে না পারার ব্যবস্থা করার প্রস্তাব এসেছে। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন হোক। নট ফর ওয়ান পার্টি’স পাওয়ার অ্যান্ড পার্টি ইন্টারেস্ট— এই থিম ও প্রিন্সিপাল আইডিয়া হচ্ছে কনস্টিটিউশন চেঞ্জ করাটা একটু ডিফিকাল্ট করার জন্য, যেন রাষ্ট্রের প্রয়োজনে সবাই সেখানে ঐক্যবদ্ধ হয়।

নারীদের জন্য ১০০ আসনের পক্ষে একমত জামায়াতে ইসলামী জানিয়ে দলটির এই নেতা বলেন, এ প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আমাদের ডিফারেন্ট থিংকিং আছে। নারী আসনে নারীরাই ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। এটা পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতিতে যদি হয়, তাহলে এখানে তাদের জন্য এটা সহজতর হবে এবং ভোটার যারা আছে, তাদের জন্যও সহজ হবে। এ প্রস্তাবটি পেন্ডিং আছে।

বড় একটি দল পিআর পদ্ধতির নির্বাচন না চাইলে তা কি আটকে যেতে পারে— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, না। আমি মনে করি, কোনো একটি বা তিনটি দল না চাইলে আটকে যাওয়াটা ইনজাস্টিস হবে, বৈষম্য হবে। কারণ, মেজরিটি তো পক্ষেই আছে। কোনো এক জায়গায় একটা সলিউশন দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মেজরিটি সংখ্যক দলই পিআর পদ্ধতিকে সাপোর্ট দিচ্ছে। শুধু এক লাইনে ব্যাখ্যা দিতে চাই, জনসমর্থনের দিক থেকে পাঁচটা-ছয়টা দল হলো- বিএনপি, এনসিপি, চরমোনাই পীর, সব ইসলামী দল, গণঅধিকার পরিষদ। আর আমরাও (জামায়াতে ইসলামী) পিআরের পক্ষে আছি।

তিনি আরও বলেন, উচ্চকক্ষ পিআর পদ্ধতিতে না হলে যদি সংসদীয় আসনের সংখ্যানুপাতিক হয়, তবে এটা তো আবার ডাবলই হলো, সেম রিপ্রেজেন্টেশন, সেম সেন্টিমেন্ট, সেম ডিসিশন। যদি সব সেম সেম হয় তাহলে দরকার কী?

আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একটা কোয়ালিটিফুল পরিবর্তন চায়। একটা চেঞ্জ চায় এবং এমন একটি সিস্টেমকে আনতে চায়, যেটা আমরা বারবারই সহজ করে বলি— ফ্যাসিস্ট যেন ফিরে না আসে। এজন্য যত ছিদ্র আছে সেগুলোকে বন্ধ করতে হবে। যদি ছিদ্র ছোটও রাখেন; এটি অনেক সময় বড় হয়ে যায়। এখানে সাপও ঢুকতে পারে। সুতরাং ছিদ্র রাখা যাবে না।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version