যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করতে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করবেন। আগামীকাল সোমবার এই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হবে।

ট্রাম্প বলেছেন, এই ফোনালাপের মূল উদ্দেশ্য হবে ‘রক্তপাত বন্ধ করা’। রোববার (১৮ মে) এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী সোমবার সকাল ১০টায় এই ফোনালাপ হবে। এরপর তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং কয়েকটি ন্যাটো দেশের নেতাদের সাথেও কথা বলবেন।

এদিকে তিন বছর পর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি শান্তি আলোচনা হলেও কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি। তবে উভয় পক্ষ একটি বন্দি বিনিময়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছে। ট্রাম্প প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যদি পুতিন বৈঠকে আসেন, তাহলে তিনিও উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু পুতিন সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

ট্রাম্প এর আগেও বলেছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে প্রকৃত অগ্রগতি আসবে তখনই, যখন তিনি এবং পুতিন সরাসরি সাক্ষাৎ করবেন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রুশ সংবাদ সংস্থাগুলোকে জানিয়েছেন, ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে ফোনালাপের প্রস্তুতি চলছে। পেসকভ তাস নিউজকে বলেন, “আলোচনা চলছে।”

অন্যদিকে ট্রাম্প তার পোস্টে লেখেন, “আশা করি এটা ফলপ্রসূ দিন হবে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে, আর এই ভয়াবহ যুদ্ধ—যেটা কখনোই শুরু হওয়া উচিত ছিল না—তার অবসান ঘটবে।”

ইউরোপের নেতারাও যুদ্ধের অবসানে অন্তত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছেন। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার নেতাদের মধ্যে সম্ভাব্য এই ফোনালাপে যুদ্ধবিরতি এবং ভবিষ্যতে সরাসরি বৈঠকের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিবিসি বলছে, ট্রাম্প দ্রুত যুদ্ধবিরতির পক্ষপাতী হলেও, মস্কো এখন পর্যন্ত ধীর গতিতে এগোচ্ছে। তবে শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের মধ্যে এক ফোনালাপে মস্কো ট্রাম্পের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে।

রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে। ইস্তাম্বুলে সর্বশেষ বৈঠকের পর ইউক্রেন পুনরায় পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়।

এক ইউক্রেনীয় কর্মকর্তার দাবি অনুযায়ী, রাশিয়া নতুন ও অগ্রহণযোগ্য শর্ত দিয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে নিজেদের অনেক এলাকা থেকে সরে যেতে হবে।

রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং পুতিনের উপদেষ্টা ভ্লাদিমির মেদিনস্কি বলেন, তারা আলোচনায় সন্তুষ্ট এবং ভবিষ্যতে আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রস্তুত।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version