আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
গাজা উপত্যকায় ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারির পর যাওয়া সব মার্কিন ভিসা আবেদনকারীর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া যাচাই বাধ্যতামূলক করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) এক অভ্যন্তরীণ স্টেট ডিপার্টমেন্ট কেবলের বরাত দিয়ে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
এই নিয়ম অভিবাসী ও অনাবাসী—সব ধরনের ভিসার আবেদনকারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে। এতে এনজিও কর্মী কিংবা যেকোনো অফিসিয়াল বা কূটনৈতিক দায়িত্বে গাজায় সফরকারী ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
‘সোশ্যাল মিডিয়া পর্যালোচনায় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কোনো নেতিবাচক তথ্য পাওয়া গেলে, আবেদনকারীর বিষয়ে নিরাপত্তা পরামর্শ মতামত (এসএও) নিতে হবে,’ বলা হয়েছে ওই বার্তায়। এসএও হলো একধরনের আন্তঃসংস্থা তদন্ত, যার মাধ্যমে যাচাই করা হয় ভিসা আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কোনো জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি কি না।
এই নির্দেশনা বিশ্বের সব মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটকে পাঠানো হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও শত শত ভিসা বাতিল করেছে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত কিছু বৈধ স্থায়ী বাসিন্দাও ছিল। ১৯৫২ সালের এক আইনের আওতায় বিদেশি কোনো ব্যক্তিকে বহিষ্কার করা যায় যদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন তার উপস্থিতি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির জন্য ক্ষতিকর।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক মুখপাত্র এই প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে জানান, প্রতিটি ভিসা আবেদনকারীর ব্যাপারে বিস্তৃত নিরাপত্তা যাচাই করা হয়।
‘আমাদের প্রশাসন দেশের নিরাপত্তা ও জনগণের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। তাই ভিসা প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করা হচ্ছে,’ বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘ভিসা আবেদনের সময় থেকে শুরু করে তার মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত আবেদনকারীদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয়, যাতে তারা এখনও যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত কি না তা নিশ্চিত করা যায়।’
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের সমালোচনা ও ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী ভিসা হারিয়েছেন। প্রশাসন বলছে, এসব কর্মকাণ্ড মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির জন্য হুমকি।
সমালোচকরা এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী অনুযায়ী বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করছেন। সংবিধান অনুযায়ী, অভিবাসন অবস্থান নির্বিশেষে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী প্রত্যেকের বাকস্বাধীনতা রয়েছে।
এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রুবিও বলেন, ‘আমি যখনই এসব উগ্রবাদীদের খুঁজে পাই, তাদের ভিসা বাতিল করি। আরও অনেকের ভিসা বাতিল হবে।’