চা যেন আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। অনেকেরই দিনের শুরুটা হয় চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে। দেশের অলি-গলিতে খুঁজলে অসংখ্য চা-প্রেমী মিলবে সহজেই। বরং চা পান করেন না—এমন মানুষ পাওয়া যায় খুবই বিরল, হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আমরা যারা প্রতিদিন চায়ের কাপে আসক্ত, তা কি শুধু অভ্যাস আর আনন্দের জন্য, নাকি এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্বাস্থ্যসচেতনতারও একটি দিক?
বেশিরভাগ মানুষই এতকিছু না ভেবে চা পান করে থাকে। কিন্তু আপনি চাইলে, একটু সচেতন হলে, চা পানের মাধ্যমে আপনার তারুণ্য ধরে রাখতে পারেন। সে জন্য কয়েকটি চায়ের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আপনি একটু চেষ্টা করলে, আপনার তারুণ্য ধরে রাখতে পারেন চায়ে।
ক্যাফিনের পরিমাণ সাধারণ চায়ের চেয়ে খানিকটা কম। কারণ এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রাও বেশি থাকে। তাই মাঝেমধ্যে গ্রিন টিতে চুমুক দিচ্ছেন, এর চেয়েও বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মেলে এমন চা-ও কিন্তু আছে। হজম ভালো হবে, পেটও পরিষ্কার থাকবে।
হোয়াইট টি
চায়ের গুণ বোঝা যায় তার রঙে ও স্বাদে। স্বচ্ছ কাচের পাত্রে চা-পাতা ভেজালে হালকা লালচে রঙ ধরে। কোন চা-পাতার রঙ হয় গাঢ়, চা-পাতার প্রক্রিয়াকরণ, কখন তোলা হচ্ছে, আবহাওয়া— এমন অনেক বিষয়ের ওপর চায়ের স্বাদ-গন্ধ নির্ভর করে। এমন একটি চা হলো হোয়াইট টি। দেখতে পানির মতোই। চা-পাতা দিলেও খুব বেশি বর্ণের বদল হয় না। অল্প প্রক্রিয়াকরণের ফলে এই চা তৈরি হয় বলে এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ অনেকটাই বেশি থাকে।
জবা চা
জবা ফুলের পাপড়ি দিয়ে চা তৈরি হয় জবা চা। এই চা কিনতেও পাওয়া যায়। চা দেখতে হয় লালচে। ভেষজ চায়ে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং অ্যান্থোসায়ানিনের মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মেলে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে এটি সাহায্য করে।
মাচা
এটি গ্রিন টির চেয়েও অনেক বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মেলে সবুজ রঙ মাচা-তে। মাচা চা নিয়ে ইদানীং হইচই চলছে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভনয়েড রয়েছে, যা শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এই চা ত্বকের জন্যও ভালো। সম্ভবত সে জন্যই নতুন প্রজন্মের কাছে এই চায়ের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ক্যানসার প্রতিরোধে, ত্বকের যত্নে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও এ চা কার্যকর।
কাওয়া চা
কাওয়া চা কাশ্মীরের অন্যতম একটি বিখ্যাত পানীয়। এটি খেতে যেমন সুস্বাদু, শরীরের জন্যও খুব উপকারী। এক কাপ কাওয়া চা খাবারের ভারসাম্য বজায় রেখে শরীরকে সতেজ রাখে। মনে আনে তারুণ্যের উচ্ছলতা। ত্বকে আসে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা। এক চুমুক দিলেই সারাদিনের ক্লান্তি মিলিয়ে যাবে এক নিমিষে।
কিন্তু কাওয়া চা বানাবেন কীভাবে—
উপকরণ: পানি ২ কাপ, গ্রিন টি পাতা ১ চা চামচ, দারুচিনি ১ টুকরো, এলাচ ২-৩ টি
৫. লবঙ্গ ২ টি, বাদাম/পেস্তাকুচি ১ চা চামচ এবং মধু স্বাদমতো।
প্রণালি: একটি হাঁড়িতে পানি দিন। এবার এতে দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এরপর গ্রিন টি পাতা দিয়ে সামান্য ফুটিয়ে নামিয়ে ফেলুন। এবার চা ছেঁকে কাপে ঢেলে উপরে বাদাম কুচি, মধু, জাফরান ছড়িয়ে পরিবেশন করুন। তবে কাওয়া চায়ে কোনো দুধ ব্যবহার করা হয় না। আদা কুচি বা গোলাপের পাপড়িও যোগ করতে পারেন।