দেশের তিন পার্বত্য জেলায় তিনটি সংসদীয় আসন থেকে আটটিতে করার দাবি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি।

সোমবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর পার্বত্যবাসীর পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাৎ ফরাজী সাকিব ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি পাইশিখই মারমা।

স্মারকলিপিতে খাগড়াছড়ি-১ (রামগড়, মানিকছড়ি, লক্ষীছড়ি ও গুঁইমারা), খাগড়াছড়ি-২ (মাটিরাঙা, মহালছড়ি, পানছড়ি), খাগড়াছড়ি-৩ (খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা) নিয়ে গঠনের দাবি জানানো হয়। এছাড়া রাঙামাটি-১ (বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল), রাঙামাটি-২ (সদর, কাউখালি, ননিয়ারচর), রাঙামাটি-৩ (জুড়াছড়ি, বিলাইছড়ি, কাপ্তাই,রাজস্বলী), বান্দরবান-১ (সদর, রুমা, থানছি, বোয়াংছড়ি), বান্দরবান-২ (লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যাংছড়ি) নিয়ে আসনগুলো গঠনের দাবি জানানো হয়।

স্মারকলিপিতে পাইশিখই মারমা বলেন, পার্তব্য এলাকায় সাতটি সশস্ত্র সংগঠন রয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলো এসব সংগঠনগুলোকে সন্ত্রাসী মদত দিচ্ছে। পার্বত্য বিশাল এলাকায় ৮টি আসন না করলে কখনো এসব এলাকায় শান্তি ফিরবে না। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি অপার সম্ভাবনাময় পার্বত্য চট্টগ্রাম। আয়তন বাংলাদেশের এক-দশমাংশ। খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি এবং বান্দরবান পার্বত্য তিনটি জেলার আয়তন ১৩ হাজার ২৯৫ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ১৮ লাখ ৪২ হাজার ৮১৫ জন। ৩টি পার্বত্য জেলায় মাত্র ৩টি সংসদীয় আসন। সম্ভাবনাময় পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং এখানের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের জীবনমান পরিবর্তন থেমে আছে প্রয়োজন অনুযায়ী সংসদীয় আসন উন্নীত না করায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ জন সংসদ সদস্যের পক্ষে ২৬টি উপজেলার মানুষের প্রতিনিধিত্ব করা কষ্টসাধ্য। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জেলা রাঙামাটি পার্বত্য জেলা। এই জেলার আয়তন ২৫ হাজার ১১৬.১৩ বর্গকিলোমিটার। উপজেলার সংখ্যা ১০টি। জনসংখ্যা ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮৭ জন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ভোটার ছিল ৪ লাখ ১৮ হাজার ২১৫ জন। এত বড় বিশাল আয়তনের জেলায় মাত্র ১ জন এমপি এভাবে চলতে পারে না। এতে করে পাহাড়ি এলাকায় শান্তি ফিরবে না।

তিনি জানান, আরও একটা কারণ হচ্ছে সেখানে অনেক জনগোষ্ঠী আছে মারমা, ত্রিপুরা ও চাকমা এই তিনটা মূলত প্রধান। তাদের থেকে সবসময় এমপি হয় রাজনৈতিক দল তাদের থেকে নির্বাচিত করে। কিন্তু এরপরে যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠীগুলো আছে, তারা কখনো নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পায় না। যদি সংসদে আসন বৃদ্ধি পায়, তাহলে তারাও এমপি হওয়ার সুযোগ পাবে। নেতৃত্ব তৈরি হবে তাদের মধ্যে যে দুঃখ-কষ্ট আছে, সেটা সংসদে বলার সুযোগ পাবে। তাদের মধ্যে যে বঞ্চনা আছে তা থেকে তারা বিক্ষুব্ধ হয় অস্ত্র ধরে। সেটা কমে আসবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version