সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের একটি চার্চে সম্প্রতি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই ঘটনায় ‘হতবাক’ হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এমনকি হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ফোনও করেন তিনি। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, সিরিয়ায় বোমা হামলা ও গাজার একটি ক্যাথলিক গির্জায় ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘হতবাক’ হয়ে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। উভয় ঘটনার পর ট্রাম্প তৎক্ষণাৎ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করেন বলেও জানান হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট।

সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “সিরিয়ায় বোমা হামলা এবং গাজার ক্যাথলিক চার্চে হামলার ঘটনায় প্রেসিডেন্ট পুরোপুরি হতবাক হয়ে পড়েছিলেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই উভয় ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন বিষয়টি স্বাভাবিক করতে।”

এর আগে গত ১৩ জুলাই দক্ষিণ সিরিয়ার সুয়েইদা প্রদেশে বেদুইন আরব গোত্র এবং সশস্ত্র দ্রুজ গোষ্ঠীর মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে ১৬ জুলাই। সেসময় ইসরায়েল সিরিয়ার প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস, জেনারেল স্টাফ হেডকোয়ার্টার ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর বিমান হামলা চালায়।

এ ধরনের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস জানায়, ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরে নেতানিয়াহুর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। তারা মনে করছে, নেতানিয়াহুর নীতি মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।

এরপর গত বৃহস্পতিবার গাজার চার্চ অব দ্য হোলি ফ্যামিলিতে (ক্যাথলিক গির্জা) ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩ জন নিহত এবং আরও ১০ জন আহত হন, যার মধ্যে প্যারিশের পুরোহিতও ছিলেন।

গাজা পরিস্থিতি নিয়ে লেভিট বলেন, “এই যুদ্ধ অনেক বেশি দীর্ঘ হয়ে গেছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে তা ভয়ানক রকম নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে”। তিনি আরও বলেন, “প্রেসিডেন্ট চাচ্ছেন এই রক্তপাত বন্ধ হোক, যুদ্ধবিরতির পথে আলোচনা শুরু হোক এবং গাজা থেকে সব জিম্মিদের মুক্ত করা হোক।”

চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করেছে, যার ফলে খাদ্য, ওষুধ এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

এমন অবস্থায় অবস্থান আরও কঠোর করে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির আন্তর্জাতিক আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version