মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ড রাশিয়াকে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাবে সমর্থন জানাতে প্রস্তুত বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে এই প্রস্তাব সামনে এসেছে বলে জানা গেছে।

পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে রোববার (১৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস গত শনিবার জানিয়েছে, ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে সাম্প্রতিক এক ফোনালাপে ট্রাম্প বলেছেন, যদি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ডনবাস অঞ্চল ছেড়ে দিতে রাজি হন, তবে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে। তিন বছরের বেশি যুদ্ধ চললেও রুশ বাহিনী পুরো অঞ্চল দখল করতে পারেনি।

ইউরোপের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, আলাস্কায় বৈঠকের সময় ভ্লাদিমির পুতিন শর্ত দেন— যুদ্ধ শেষ করতে হলে ইউক্রেনকে ডনবাস থেকে সরে যেতে হবে। একই সঙ্গে তিনি ট্রাম্পকে প্রস্তাব দেন, ফ্রন্টলাইনের বাকি অংশে যুদ্ধবিরতি টানা হবে।

বর্তমানে রাশিয়া প্রায় পুরো লুহানস্ক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দোনেৎস্কের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা— ক্রামাতোরস্ক, স্লোভিয়ানস্ক ও শক্তিশালী দুর্গসদৃশ অবস্থানগুলো এখনো ইউক্রেনের দখলে। পুতিন ট্রাম্পকে বলেছেন, যদি দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক হস্তান্তর করা হয় তবে তিনি খেরসন ও জাপোরিঝিয়া ফ্রন্টে অগ্রযাত্রা থামাবেন এবং সেখানকার যুদ্ধ স্থির রাখবেন।

ট্রাম্প খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ ডনবাস অঞ্চল রাশিয়াকে দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নেন। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির চেয়ে শান্তি চুক্তিই বেশি কার্যকর, কারণ যুদ্ধবিরতি “অনেক সময় স্থায়ী হয় না”। শনিবার এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে তিনি এ কথা উল্লেখ করেন।

এক যৌথ বিবৃতিতে ইউরোপীয় নেতারা জানিয়েছেন, তারা “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে ইউরোপের সমর্থনে একটি ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনে কাজ করতে প্রস্তুত”। তবে তারা স্পষ্ট করে দেন, “ইউক্রেনের ভূখণ্ড সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব ইউক্রেনেরই। আন্তর্জাতিক সীমানা বলপ্রয়োগে পরিবর্তন করা যাবে না।”

ট্রাম্প ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর জেলেনস্কি এক বিবৃতিতে বলেন, “আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। একটি স্থায়ী ও বাস্তব শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা শুধুই রুশ আগ্রাসনের মধ্যবর্তী আরেকটি বিরতি নয়।”

শনিবার তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, যুদ্ধবিরতি ছাড়া সরাসরি শান্তি চুক্তির পথে এগোনোর চেষ্টা “পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে”।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version