দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে চান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর এই আগ্রহ প্রকাশ করলেন ট্রাম্প।
রোববার সকালে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, “ভারত ও পাকিস্তানের দৃঢ়, অবিচল ও প্রভাবশালী নেতৃত্বের প্রতি আমি গর্বিত। কারণ তাদের মধ্যে এই সত্য বোঝার মতো জ্ঞান, শক্তি এবং দৃঢ়তা রয়েছে যে চলমান সংঘাত থামানোর এখনই সময় এবং যদি এটি না থামানো যায়, তাহলে এই সংঘাতের জেরে লাখ লাখ নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটবে দুই দেশে। আপনাদের এই সাহসী পদক্ষেপের জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অনেকাংশে সমৃদ্ধ হয়েছে।”
“আমি আরও গর্বিত এই কারণে যে আপনাদের এই ঐতিহাসিক এবং নায়োকোচিত সিদ্ধান্তে পৌঁছার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করতে পেরেছে। যদিও এখনও (দুই দেশের সরকারের সঙ্গে) আমাদের আলোচনা হয়নি, তবে আমি আপনাদের উভয়ের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমি আপনাদের উভয়ের সঙ্গে কাজ করতে চাই এবং দেখতে চাই যে ‘এক হাজার বছর পর’ কাশ্মির ইস্যুতে আপনারা একটা সমাধানে পৌঁছেছেন।”
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় হামলা চালিয়ে ২৬ জন পর্যটককে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। নিহত এই পর্যটকদের সবাই পুরুষ এবং অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী।
এ ঘটনায় সিন্ধু নদের পানি বণ্টনচুক্তি ও পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কয়েকটি কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয় ভারত। জবাবে ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ, ভিসা বাতিলসহ কয়েকটি পাল্টা পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তানও।
দুই দেশের মধ্যে চলমান এই উত্তেজনার মধ্যেই গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের অধিকৃত কাশ্মিরসহ বিভিন্ন এলাকায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক সংক্ষিপ্ত সেনা অভিযান পরিচালনা করে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী। নয়াদিল্লির তথ্য অনুযায়ী, এ অভিযানে ৭০ জন পাকিস্তানি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। তবে পাকিস্তানের দাবি, নিহত হয়েছে ৩১ জন এবং আহত হয়েছে ৫৭ জন।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর তিন দিনের মধ্যে ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ শুরু করল পাকিস্তান। আরবি ‘বুনিয়ানি উল মারসুস’-এর বাংলা অর্থ সীসার প্রাচীর।
এদিকে পাল্টাপাল্টি এই সংঘাতের মধ্যেই তৎপর হয় যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের চাপে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ। আর শনিবার সন্ধ্যায় ট্রুথ সোশ্যালে সর্বপ্রথম এই সংবাদ নিশ্চিত করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।