আওয়ামীপন্থি ৮৪ আইনজীবীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ!
বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হামলা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার মামলায় আওয়ামীপন্থি ৮৪ জন আইনজীবীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ৯ আইনজীবীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করা হয়। এরমধ্যে ৮ জনই নারী আইনজীবী।
রবিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশে দেয়। এর আগে ৯৩ জন আইনজীবী আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করেন।
আজ সকালে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণপূর্বক জামিনের আবেদন করেন এসব আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তাদের জামিন শুনানি শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে বিকেল ৫টার পর আদালত এই আদেশ দেন।
এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম।
তিনি বলেন, আসামিপক্ষে জামিন চাওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। শুনানি শেষে আদালত সন্তুষ্ট হয়ে ৯ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন। এর মধ্যে ৮ জন নারী আইনজীবী রয়েছেন।
আওয়ামীপন্থি ৯৩ আইনজীবীর মধ্যে রয়েছেন- বারের সাবেক সভাপতি সাইদির রহমাম মামিক, শাহ আলম, মাহবুবুর রহমান, আবু সাইদ সাগর, আসাদুর রহমান রচি, সাইবার ট্রাইব্যুনালের পিপি নজরুল ইসলাম শামিমসহ বারের সাবেক সদস্যরা।
এর আগে, গত ৪ আগস্ট আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের ওপর হামলা, চেম্বার ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আওয়ামীপন্থি ১৪৪ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী বাবু। এ ঘটনায় হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের জামিন নিয়েছিলেন ১১৫ জন। ৭ এপ্রিল অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন আগেই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ৯৩ আইনজীবী।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বেলা ১২টার দিকে আসামিরা ঢাকা আইনজীবী সমিতির সম্মুখ থেকে বেআইনি জনতাবদ্ধে আবদ্ধ হয়ে অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। তারা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই’, ‘রাজপথ ছাড়ি নাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
এ সময় ভুক্তভোগী আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী বাবু মামলার শুনানি শেষ করে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে আসেন। তখন আসামি আনোয়ার শাহাদাৎ শাওন হেলমেট পরে পিস্তল দিয়ে হত্যার উদ্দেশে গুলি তাক করেন। আসামি ওয়াকিল লোহার রড দিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশে আঘাত করেন। এতে তিনি গুরুতর রক্তাক্ত জখম হন৷
এছাড়া অন্য আসামিরা স্লোগান দিয়ে বাদীসহ অন্য আইনজীবীদের কিলঘুষি মারেন এবং লোহার রড ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারাত্মক আঘাত করেন। আসামিরা বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের চেম্বার ভাঙচুর ও লাখ লাখ টাকা মূল্যের মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আসামিরা আশপাশের আইনজীবীদের প্রাণনাশের হুমকি দেন। তারা ঢাকা আইনজীবী সমিতির চেম্বার ভবন ও ভবনের গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এক কোটি টাকার ক্ষতি সাধন করেন।