বহুজাতিক কোম্পানি নোভারটিসের কর্মীদের ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত মামলা আপিল বিভাগে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার হস্তান্তর করা যাবে না। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি মো. রেজাউল হক এ আদেশ দিয়েছেন।
শনিবার (২১ জুন) আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী মিসকাতুর রহমান।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টে নোভারটিস লিমিটেডের কর্মীদের কর্মসংস্থান ও কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তর সংক্রান্ত দাবিকে কেন্দ্র করে চলমান আইনি লড়াই আরও এক ধাপ এগিয়েছে। পূর্ববর্তী রিট আবেদনের ধারাবাহিকতায় সিভিল মিসেলেনিয়াস পিটিশন (সিএমপি)টি সম্প্রতি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য উত্থাপিত হয়। কর্মীদের পক্ষে সেদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি যুক্তি তুলে ধরে বলেন, মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শেয়ার হস্তান্তরের কোনো পদক্ষেপ নিলে কর্মীরা ন্যায্য পাওনা ও ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
আদালত বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের প্রতি মৌখিক নির্দেশ দেন– নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তর সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বন্ধ রাখতে এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। নির্দেশের পাশাপাশি বিবাদী পক্ষের আইনজীবী আদালতে একটি লিখিত অঙ্গীকার দাখিল করেন, যেখানে মামলার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত শেয়ার হস্তান্তর না করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
এ আদেশ ও লিখিত অঙ্গীকার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্য বাধ্যতামূলক। ফলে সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত নোভারটিসের কোনো শেয়ার হস্তান্তর করা যাবে না। কর্মীরা এখন এই বহুল আলোচিত মামলার চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন, যা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি-দাওয়া ও স্বার্থ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।
এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বহুজাতিক কোম্পানি নোভারটিসের ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারীর ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাদের দাবি করা ৮৪ মাসের বেতন কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে আবেদনকারীদের দরখাস্ত নিষ্পত্তি না করার নিষ্ক্রিয়তাকে কেন আইন বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়। একইসঙ্গে নোভারটিসের শেয়ার হস্তান্তরে ও আবেদনকারীদের চাকরির বিষয়ে দুই মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন আদালত।
বিচারপতি মোহাম্মদ আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।
শ্রম সচিব, নোভারটিস কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।